ছোট বেলায় আমি এখনকার থেকে আরো অনেক বেশি বোকা ছিলাম। সেরকমই একটা বোকামির কথা আজকে আমার মনে পরছে। আমার বাবা স্বর্নকার ছিলেন, চোখের পাওয়ারের প্রব্লেমের জন্য এখন আর কাজ করতে পারেননা। যাইহোক, বাবা ছিলেন শিল্পী, ব্যবসায়ী নয়, তাই আমরা খুব একটা স্বাচ্ছন্দের মধ্যে ছিলামনা। দরকারী সব জিনিসি পেতাম, কিন্তু সখের কোনো জিনিস কিনতে হলে খুব মুশকিলে পরে যেতাম। পূজোতে আমার একটাই জামা প্যান্ট হত। অথচ আমার পাড়ার খুব গরীব বন্ধুরও দেখতাম, দুটো, কি তিনটে জামা হয়েছে। ওদের, কাকা কিংবা মামা হয়ত দিত। আমার কাকাও নেই, মামারাও অনেক দূরে দূরে থাকে, আমার মাসতুতো ভাইবোনের সংখ্যাও বেশ বেশী। সুতরাং সেদিক থেকেও কিছু পাওয়ার আশা ছিলনা। সবাই দেখতাম, ষষ্ঠী থেকেই নতুন জামা পরতে শুরু করেছে, আমি সপ্তমীর আগে নতুন জামা পরতে পারতামনা, সকালে বিকেলে একই জামা। আর দুদিন, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গত বছরের একটু খাটো পূজোর জামা, আর নাহলে দাদাদের, ছোট হয়ে যাওয়া, জামা পরতাম। পুরনো জামা পরে ঠাকুর দেখতে যেতে খুব লজ্জা করত। যাইহোক, যে কথাটা লিখতে বসেছিলাম, সেটা এখনও লিখিনি। আমাদের আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে, উপহার দেওয়া নেওয়ার প্রচলন ছিলনা। কেও যদি ঘুরতেও আসত তাহলে, বাড়ীর ছোটদের জন্য হাতে করে কিছু নিয়ে আসত না। একবার আমার মাসীর দেওর একাই আমাদের বাড়ীতে ঘন্টা খানেকের জন্য বেড়াতে এসেছিলেন, যথারীতি খালি হাতে। উনি আমাকে খুব ভালবাসতেন, বলে জানতাম। ওনার একটা মুদীর দোকান ছিল। আমি আশা করেছিলাম যে উনি আমার জন্য কিছু নিয়ে আসবেন। উনি যখন চলে যাচ্ছিলেন আমি চুপি চুপি তার কানে কানে বললাম যে “পরের বার যখন আসবেন, তখন আমার জন্য বেলুন আর লজেন্স নিয়ে আসবেন”। উনি চলে গেলেন, কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই ফিরে এলেন, পকেটে এক প্যাকেট লজেন্স আর বেলুন নিয়ে। আমিতো তখন লজ্জায় পরে গেছি। কিন্তু আমি সেগুলো নিয়েছিলাম। তারপর আমার বাবা, মা, দুইদাদা, সবাই খুব শাসন করল, আমি কিছুতেও তাদের বুঝিয়ে উঠতে পারলামনা যে আমি শুধু তার কর্তব্যই মনে করিয়ে দিয়েছিলাম। কোন বাড়ীতে ছোটো ছেলে থাকলে, সেই বাড়ীতে বেড়াতে গেলে কিছু ছোটখাট উপহার নিয়ে যাওয়া উচিত। তারপর আমার দাদারা সেই বেলুন ফোলাল, ফাটাল, লজেন্স খেল, কিন্তু কেও আমাকে একবারও বাহবা দিলনা। তারপর বহুদিন সেই মাসতুতো কাকা আমাদের বাড়ীতে আসেননি।
Sunday, October 28, 2007
Monday, August 27, 2007
অভ্যন্তরীন পূর্ণ প্রতিফলন
Posted by Anirban 0 comments
Tuesday, August 21, 2007
মনে হল, তাই লিখি
একুশে আগষ্ট, দু হাজার সাত। আজ থেকে আমার নতুন ব্লগ শুরু করলাম।
ছোট বেলায় ডায়রী লিখতাম। লেখা কমতে কমতে একটা ডায়রী আধখানা ফাকা পরে রইল। ধরা যেতে পারে এটা আমার ডায়রী, তবে দিনলিপি নয়। যখন পড়াশোনা শেষ হতে না হতে চাকরি নিয়ে রাচীঁ চলে গেলাম তখন চিঠি লিখতাম, পাতার পর পাতা। একটা চিঠি আমি কখনও এক বারে লিখতামনা। যখন যা মনে হত তাই লিখতাম। তার পর চাকরী পালটে কলকাতায়। চিঠি লেখার গল্প শেষ হল। তবু আমার মনে হত কিছু লিখি। বানিয়ে বানিয়ে গল্প লিখতে পারিনা। কবিতার লেখার মত ততটা কবি কবি ভাব আমার সহজে আসেনা। তত দিন অপেক্ষা করতেও ভাল লাগেনা। তাই গদ্যতেই শুরু করে দিলাম। এই লেখা গুলো আমার কবিতা না হয়ে ওঠা ভাবনা। আমার চার পাশে রোজকার ছোট ছোট যে সব বাস্তব নাটক, কবিতা, গল্প মনে দাগ কাটে কিংবা শুধু একটু আচড় কেটে যায় সেগুলিই হবে আমার লেখার বিষয়।
Posted by Anirban 0 comments